করোনা ভাইরাসকে নয় আসুন ভাইরাসের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহকে ভয় করি। মুমিনের জন্য ভয় কিসের। মুমিনের সবকিছুতেই রয়েছে কল্যান।
স্বয়ং আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (ﷺ) যখন প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন তাহলে মুমিনের ভয় কিসে?
আসুন সেই প্রেসক্রিপশন (কুরআন ও হাদিস) অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার চেষ্টা করি। আল্লাহ সহজ করে দিবেন ইন শা আল্লাহ।
আসুন বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি থেকে আশ্রয় চাইতে নিচের দুয়াটি বেশি বেশি পড়ি এবং ইস্তেগফার করি।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ، وَالْجُنُونِ، وَالْجُذَامِ، وَمِنْ سَيِّئِ الأَسْقَامِ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযু বিকা মিনাল বারাস্বি অলজুনূনি অলজুযা-মি অমিন সাইয়্যিইল আসক্কা-ম।
অর্থঃ হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট ধব্বল, উন্মাদ, কুষ্ঠরোগ এবং সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (আঃ দাঃ ১৫৫৪)।
....................................
রসূল ﷺ বলেন, ‘যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তা ছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। [ইবনে মাজাহ, ৪০১৯]
তাই সকল প্রকার অশ্লীলতা ছাড়তে হবে।
তাকদীরে বিশ্বাস রেখে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবেঃ
....................................
আল্লাহ্ বলেন:
‘আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা, ২:১৫৫)
আল্লাহ্ আরো বলেন: "তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন।" ( সুরাহ আশ-শুরা, ৪২ঃ৩০)
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান; তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। (সূরাঃআল-হাদীদ ৫৭ঃ২)
আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি তোমাদের পূর্বেকার জাতিসমূহের কাছে বহু রাসূল পাঠিয়েছি। অতঃপর (রাসূলগণকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার কারণে) তাদেরকে অভাব-অনটন ও রোগ-শোক দ্বারা পাকড়াও করেছি, যাতে তারা বিনীত হয়।’ [সুর আনআম, ৬: ৪২]
যমীনে এবং তোমাদের নিজদের মধ্যে এমন কোন মুসীবত আপতিত হয় না, যা আমি সংঘটিত করার পূর্বে কিতাবে লিপিবদ্ধ রাখি না। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজ। (সূরাঃআল-হাদীদ ৫৭ঃ২২)
রোগ ও চিকিৎসাঃ
....................................
উসামাহ্ ইবনু শরীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন : হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি ঔষধ ব্যবহার করব? তিনি (ﷺ) বললেনঃ হ্যাঁ। হে আল্লাহর বান্দাগণ! চিকিৎসা করো। কেননা বার্ধক্য রোগ ব্যতীত আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেননি যার নিরাময় সৃষ্টি করেননি। (তিরমিযী ২০৩৮)
মধু ও কালোজিরা দ্বারা চিকিৎসা প্রসঙ্গে হাদিসঃ
....................................
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছেন। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ কালোজিরার মধ্যে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া আর সকল রোগের চিকিৎসা নিহিত আছে। ইবনু শিহাব (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ ‘‘সাম’’ অর্থ মৃত্যু। আর ‘‘হাববাতুস্ সাওদা’’ অর্থ শূনীয বা কালোজিরা। (বুখারী ৫৬৮৭)
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী (ﷺ)-এর নিকট এসে বলল, আমার ভাইয়ের ডায়রিয়া হয়েছে। তখন রসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। সে মধু পান করাল। সে আবার এসে বলল : আমি তাকে মধু পান করিয়েছি, এতে তার ডায়রিয়া আরো বেড়ে গেছে। এভাবে তিনি তাঁকে তিনবার বললেন (অর্থাৎ- ডায়রিয়া ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার কথা জানালো)। অতঃপর সে চতুর্থবার এসে অভিযোগ করল। এবারও তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। সে বলল : আমি অবশ্যই তাকে মধু পান করিয়েছি, কিন্তু তার ডায়রিয়া আরো বেড়ে গিয়েছে। তখন রসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ আল্লাহ (তাঁর কালামে) যা বলেছেন, তা সত্য, তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যা (অর্থাৎ- পেটে দূষিত কোন কিছু রয়েছে।) অতঃপর আবার তাকে মধু পান করাল এবং সে আরোগ্য লাভ করল। (বুখারী ৫৭১৬)
....................................
মধু মানুষের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার। এটি মানব দেহে ঔষধের মতো কাজ করে। এটি পেটের অসুখের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। যেহেতু পেট সুস্থ থাকলে সমস্ত শরীর সুস্থ থাকে। তাই বলা যায়, মধু পান করলে সমস্ত শরীরও সুস্থ থাকে। মধুর মধ্যে যে আরোগ্য আছে সেটি কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। কাজেই দৃঢ় ঈমান রেখে আরোগ্য লাভের উদ্দেশে মধু পান করলে উপকৃত হওয়া যাবে ইনশা-আল্লাহ।
- পরামর্শ প্রদানে জিম্মাদার টিম